সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেঁচা বিক্রির পোস্ট দেখে ক্রেতা সেজে পেঁচাটিকে উদ্ধার করেছে মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের অন্তর্গত সাতগাঁও বাজারসংলগ্ন মাধবপাশা এলাকার হাফিজুর রহমানের বাড়ি হতে পেঁচাটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
জানা যায়, একটি হুতুম পেঁচার ছবি সংযুক্ত করে ‘কবিরাজি কাজের জন্য একটা জীবিত পেঁচা বিক্রি করা হবে, লোকেশন শ্রীমঙ্গল। মোবাইল নাম্বার ০১৯১৩৫৪৮২৮৩’ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার সকালে জনৈক ‘হাফিজুর রহমান’ নামীয় একটি ফেসবুক একাউন্টের প্রোফাইলে পোস্ট আপলোড করা হলে সেটি তাৎক্ষণিকভাবে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে শ্রীমঙ্গলের মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম কৌশলে ক্রেতা সেজে উক্ত পেঁচাটি ক্রয়ের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপ করেন।
আলাপকালে পেঁচাটির মূল্য ২ হাজার ৫ শত টাকা নির্ধারণ করে কৌশলে হাফিজুরের বাড়ির ছিকানা সংগ্রহ করেন তিনি। পরে পেঁচাটিকে উদ্ধারের জন্য ওইদিন দুপুরের দিকে বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট তাজুল ইসলাম, বনপ্রহরী সুব্রত সরকারসহ বন বিভাগের আরও কয়েকজন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে হাফিজুরের বাড়িতে উপস্থিত হন তিনি।
এ সময় বন বিভাগের গাড়ি দেখতে পেয়ে প্রথমে তাৎক্ষণিকভাবে হাফিজুর রহমান পালিয়ে গেলেও শেষে তার অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কথা উল্লেখ করে বন কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পেঁচাটিকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে ফেসবুক প্রোফাইল হতে নিজ হাতে পোষ্টটি কেটে ফেলেন তিনি।
হাফিজুর রহমান আরও জানান, পেঁচাটিকে কেউ আটক করেনি। সকালে তাদের বাড়ির জানালার সামনে পেঁচাটিকে দেখতে পেয়ে না জেনে না বুঝে কৌতুহলে পেঁচাটির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন।
মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, হুতুম পেঁচাটিকে সুস্থ্য ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবুও ক্ষাণিক পর্যবেক্ষণ শেষে বৃহস্পতিবার রাতেই পেঁচাটিকে লাউয়াছড়ার জঙ্গলে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।