Wednesday , 19 March 2025 [bangla_day] , [english_date], [bangla_date]
Home / জাতীয় / রাজনীতি / শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা

শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘৃণা, বিদ্বেষ ও উস্কানীমূলক (হেইট স্পিচ) সব ধরনের (লিখিত, অডিও-ভিডিও) বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যমসহ সব ধরনের মাধ্যম থেকে তাঁর প্রচার-প্রকাশিত বক্তব্য-বিবৃতি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রসিকিউশনের আবেদনে চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন।

প্রসিকিউশনের আরজি তুলে ধরে ট্রাইব্যুনালের আদেশে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চলছে।

চলমান এই তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন ঘৃণা-বিদ্বেষ ও উস্কানীমূলক বক্তব্য (হেইটস্পিচ) তিনি (শেখ হাসিনা) ইতিমধ্যে দিয়েছেন

যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ হয়েছে বলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রসিকিউশনের দাবি, তাঁর (শেখ হাসিনার) এমন ঘৃণা-বিদ্বেষ ও উস্কানীমূলক বক্তব্য-বিবৃতি অভিযোগকারী, ভুক্তোভোগী এবং সাক্ষীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য হুমকি।

তাই অভিযোগকারী, ভুক্তোভোগী, সাক্ষীদের সুরক্ষা-নিরাপত্তা এবং নির্বিঘ্ন-সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রধান আসামি শেখ হাসিনার যেসব ঘৃণা-বিদ্বেষ ও উস্কানীমূলক বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার-প্রকাশিত হয়েছে, তা এই আদেশ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

একই সঙ্গে তাঁর (শেখ হাসিনার) ঘৃণা, বিদ্বেষ ও উস্কানীমূলক (হেইট স্পিচ) বক্তব্য-বিবৃতি গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব ধরনের মাধ্যমে প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।’আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।

শুনানিতে গাজী এম এইচ তামিম বলেন, গত ২৮ অক্টোবর অনলাইন সংবাদ মাধ্যম নিউজবাংলা, দৈনিক আমার সংবাদ এবং গত ৯ নভেম্বর জনকণ্ঠে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হেইট স্পিচ নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে।

তাঁর হেইট স্পিচ অভিযোগকারী, ভুক্তোভোগী (ভিকটিম), সাক্ষী এবং সুষ্ঠু তদন্তের জন্য হুমকী।
এভাবে চলতে থাকলে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কোনো সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য দেওয়ার সাহস পাবেন না। যা বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।প্রসিকিউটর তামিম বলেন, বিদেশে পালিয়ে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) তাঁর দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে টেলিকিমিউনিকেশন করতেই পারেন। স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা দিচ্ছি না।

আমরা তাঁর স্পিচ বন্ধ করার পক্ষে না, হেইট স্পিচের বিপক্ষে।
শুনানির এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, যেসব বক্তব্য তুলে ধরেছেন, এগুলো শেখ হাসিনার বক্তব্য কিনা? জবাবে প্রসিকিউটর বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর (শেখ হাসিনা) এসব বক্তব্য আছে। সারা দুনিয়ার মানুষ দেখেছে ও শুনেছে।

বিচারক জানতে চান, প্রচার-প্রকাশিত এসব বক্তব্যের বিষয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) বা তাঁর দলের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি তোলা হয়েছে কিনা? এই প্রশ্নে প্রসিকিউটর তামিম ‘না’ সূচক জবাব দেন।

গাজী এম এইচ তামিম শুনানিতে আরো বলেন, শেখ হাসিনার যেসব বক্তব্যের প্রচার-প্রকাশ হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন (সংশোধিত), ১৯৭৩ এর ২৩(ক)(খ) ও ৪৬ ধারা, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন, ২০০১ এর ৬৬(১) ধারা, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ, রোম সংবিধি এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) এর ১৯(১) ও ২০(২) ধারাসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে হেইট স্পিচ।আর হেইট স্পিচ একটি ফৌজদারী অপরাধ।

ফলে যেসব হেইট স্পিচ প্রচার-প্রকাশিত হয়েছে, সব ধরনের মাধ্যম থেকে তার অপসারণ চাচ্ছি। আমরা জানতে পেরেছি, আগামী ৮ ডিসেম্বর বা তার আগে-পরে তাঁর হেইট স্পিচ আসতে পারে।

যদি আসে, তা যেন কোনো মাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ না হয় এবং ভবিষ্যতে তাঁর (শেখ হাসিনার) হেইট স্পিচের প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছি। এরপর ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেন।

About Editor Todaynews24

Check Also

‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচন’ কোনো অর্থ বহন করে না : মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন–কোনো অর্থ বহন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *