বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান। সে দলে থাকলে অন্যান্য খেলোয়াড়রাও আত্মবিশ্বাস পান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের নিয়মিত সার্ভিস পাচ্ছে না বাংলাদেশ। বিভিন্ন কারণে তিনি বারবার ছুটি নিচ্ছেন। এর বাইরে চোট সমস্যা তো আছেই। সবমিলিয়ে সাকিবকে নিয়ে দোটানায় দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝপথে চোটের কারণে ছিটকে যান। এরপর ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজে ফিরলেও খেলেছেন মাত্র একটি টেস্ট। পরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি নেন। বিপিএল দিয়ে আবারও ক্রিকেটে ফিরেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সীমিত ওভারের ক্রিকেটও খেলেছেন।
বিপিএল চলাকালীনই গুঞ্জন ওঠে, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজ খেলতে চান না সাকিব। কারণ ওই সময় আইপিএল চলবে। কিন্তু পরবর্তীতে আইপিএলে দল পাননি সাকিব। এতে তার টেস্ট না খেলারও কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। এই অলরাউন্ডারও সম্মতি দেন। ফলে তাকে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য ওয়ানডে ও টেস্ট দল ঘোষণা করে বিসিবি।
কিন্তু মানসিক কারণ দেখিয়ে আবারও ছুটি নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তাকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কোনো একটা সিরিজের পূর্বে সবার একটাই প্রশ্ন, সাকিব কি খেলবেন? এমনকি দল ঘোষণার পরও প্রশ্ন থেকে যায়। কারণ, জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলেও তাকে রাখা হয়েছিল। পরে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এবারও একই সমস্যা। প্রথমে বিসিবি বলেছিল, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে চায় তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাকিবের দাবিই মেনে নিতে হয়েছে।
এখন প্রশ্ন ওঠেছে, সাকিব যা বলছেন বিসিবি কী সবই মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে? অবস্থাদৃষ্টে এমনটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। এই যেমন, সম্প্রতি দুবাই যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলে যান, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ থেকে বিশ্রাম চান। তবে টেস্ট সিরিজটা খেলবেন। এ কথা তখন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকেও অবহিত করেন তিনি। এর দুইদিন পর বিষয়টি নিয়ে আবারও বিসিবির পক্ষ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়। এবার সাকিব পুরো দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই ছুটি চেয়েছেন এবং বিসিবিও সেটা মঞ্জুর করে নিয়েছে।
একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, সাকিব ছুটি চাইলেই বিসিবি সেটা দিয়ে দিচ্ছে। তাই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে, সাকিব যা বলছেন সবই মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে বিসিবি?