খুলনার দিঘলিয়ায় ভারতীয় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দিঘলিয়া উপজেলার কাজীরহাট এলাকায় স্থানীয় এক জেলের জালে কচ্ছপটি ধরা পড়ে। ওই দিন গাজীরহাট ক্যাম্প পুলিশ সেটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগকে খবর দেয়। এরপর রবিবার সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেটিকে উদ্ধার করে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যান। ধরাপড়া কচ্ছপটি শীঘ্রই ভারতে ফেরৎ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, খুলনার দিঘলিয়ার গাজীরহাটে জেলের জালে ভারতের স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো একটি কচ্ছপ ধরা পড়ার পর সেটি প্রথমে পুলিশ উদ্ধার করে। রবিবার দুপুরে কচ্ছপটিকে সেখান থেকে এনে করমজলে রাখা হয়েছে।
করমজল বাটাগুরবাস্কা প্রজেক্টের ষ্টেশন ম্যানেজার আ. রব জানান, বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের গতি ও আচরণবিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, খাদ্যভাস এবং প্রজনন সম্পর্কে জানতে ভারতের টাইগার প্রজেক্ট গত ১৫ জানুয়ারি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো ১০টি পুরুষ কচ্ছপ সেদেশের সজনেখালীর কুলতলীতে নদীতে ছেড়ে দেয়। বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের কার্যক্রম জানতে বাংলাদেশ বনবিভাগ, অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
ভারতের থেকে টার্টেল সারভাইভাল এলায়েন্স (টিএসএ) ইন্ডিয়ার প্রজেক্ট বায়োলজিষ্ট শ্রীপর্ণা দত্ত মোবাইলফোনে ইত্তেফাককে বলেন, বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের আচরণবিধি জানার জন্য গত ১৫ জানুয়ারি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ১০টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছিলো। ঐ কচ্ছপের একটি বাংলাদেশের খুলনায় জেলেদের জালে ধরা পড়েছে এবং অপর একটি কচ্ছপ সুন্দরবনের কাছে বলেশ্বর নদী এলাকায় বিচরণ করছে। ধরাপড়া কচ্ছপটি শীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে ফেরৎ আনা হবে। এক বছর মেয়াদী টার্টেল সারভাইভাল এলায়েন্স প্রজেক্টের অর্জিত তথ্য আগামী ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সুন্দরবন বিভাগের খুলনাস্থ বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, বাংলাদেশেও বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপের গতি ও আচরণবিধির গবেষণায় ২০১৮ সালে সুন্দরবন অঞ্চলে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার লাগানো ৫টি বাটাগুরবাস্কা কচ্ছপ নদীতে ছাড়া হয়েছিল। এরমধ্যে দুটি কচ্ছপ জেলেদের জালে আটকে মারা পড়ে। অন্য তিনটির কোন হদিস এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।