পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পর পুনরায় পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৩ নভেম্বর) করাচি থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর মধ্যদিয়েই এ যোগাযোগ পুনর্প্রতিষ্ঠা পায়। যা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো জাহাজ বাংলাদেশে পৌঁছল। নতুন এ সমুদ্র যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রামে ৩০০টি কনটেইনার নিয়ে আসে জাহাজটি। পাকিস্তানের বাংলাদেশস্থ হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ একে ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের এক বিশাল অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানের উপস্থিতি ভারতের জন্য নিরাপত্তার প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
এ বিষয়ে একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জানান, বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর- দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে পাকিস্তানের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। এতদিন এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যক্রম সিঙ্গাপুর বা কলম্বোতে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হতো।
বর্তমানে সরাসরি সমুদ্রপথে পাকিস্তানি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় এই বিশেষজ্ঞের মতে, এই পরিবর্তন শুধু বাণিজ্যের জন্য নয়, বরং এই রুট ব্যবহার করে চোরাচালানের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে পাকিস্তানি জাহাজ আসা মানেই চোরাচালানের সুযোগ তৈরি হওয়া। এর ফলে অস্ত্র বা অবৈধ পণ্য বাংলাদেশ হয়ে ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে পৌঁছে যেতে পারে। এটি ২০০৪ সালের চট্টগ্রাম বন্দরের অস্ত্র আটকানোর ঘটনার মতো পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি করতে পারে’।
এ সময় তিনি ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই পরিচালিত একটি অস্ত্র চালান ধরা পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। যা এখনও দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় অবৈধ অস্ত্র জব্দের ঘটনা। ওই সময় চীনা অস্ত্রের একটি বড় চালান ভারতের আসামের জঙ্গি সংগঠন উলফার কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।
এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, বিশেষ করে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনা এবং অঞ্চলে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের সমস্যা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ইতোমধ্যেই ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগের কারণ। এখন সরাসরি পাকিস্তানের প্রবেশাধিকারের ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের কৌশলগত দিকগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ভারতকে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বাংলাদেশে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব প্রতিহত করার জন্য কৌশল তৈরি করতে হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, বিশেষ করে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনা এবং অঞ্চলে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের সমস্যা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত ইতোমধ্যেই ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগের কারণ। এখন সরাসরি পাকিস্তানের প্রবেশাধিকারের ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের কৌশলগত দিকগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ভারতকে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বাংলাদেশে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব প্রতিহত করার জন্য কৌশল তৈরি করতে হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।